মধ্য ভারতে পদ্মাবতী নামের একটি রাজ্য ছিল। এর প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ভুরিভাসু। তাঁর একটি কন্যা ছিল- মালতী। সে খুব ই সুন্দরী এবং গুণী ছিল। সে প্রায়শই নিজের বাড়ির উপরের তলায় বরামদায়ে বসে ঠান্ডা শীতল হওয়ার মজা নিতো এবং রাস্তায় আসা-যাওয়া লোকদেরও দেখতে থাকতো। বহু যুবক মালতীর দিকে আকৃষ্ট ছিল। তারা মালতির এক ঝলক দেখার জন্য রাস্তার এপার-ওপার ঘোরাঘুরি করতে থাকতো।
তবে মালতী শান্ত থাকতো এবং এমন অভিনয় করতো যেন সে এই সমস্ত বিষয়ের সম্পর্কে কিছু জানে না। এই যুবকদের মধ্যে মাধব নামের একটি যুবক ও ছিল। সে খুব সুদর্শন ছিল। মাধব সেখানকার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিল। এমন একদিনও হয়নি যখন সে মালতীর বাড়ির নিচে বেড়াতে আসে নি।
মাধব মালতীর সৌন্দর্যে মুগ্ধ ছিল। সে তার দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য অনেক চেষ্টা করত। মালতী অনেকবার মাধবকে দেখে ও ছিল। সে তাঁর ব্যক্তিত্বের প্রশংসা ও করতো তবুও এমন অভিনয় করতো যেন কখনই তাকে লক্ষ্য করে নি। দিনের পর দিন কাটতে লাগলো। এখন মাধব তার ধৈর্য হারাতে লাগলো। সে ভাবতে লাগলো যে এখন মালতীর কাছে পৌঁছানোর জন্য অন্য কোনো উপায়ে করতে হবে। তার কিছু দিন পরে শহরে বসন্তের বিখ্যাত উত্সব শুরু হলো।
এই উত্সবটি প্রেমের দেবতা কামদেবকে সমর্পিত ছিল। এই উত্সবে পুরুষ এবং মহিলাদের প্রচুর ভিড় থাকতো। এই উৎসবে যে কোনও পুরুষ যে কোনও মহিলার সাথে কথা বলতে পারে এবং যে কোনও মহিলা যে কোনও পুরুষের সাথে কথা বলতে পারে। মাধব তাঁর সেরা বন্ধু মাকরান্দের সাথে এই উত্সবে যাওয়ার জন্য তৈরী হলো। দুজনেই বেশ সেজে গুঁজে উৎসবে পৌঁছালো।
মালতী ও তার কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে সেখানে এসেছিল। তারা এখানে-সেখানে ঘোরাঘুরি করছিল। মাধব এবং মাকরান্দ তাকে বিনোদনের জায়গায় এবং অন্যান্য জায়গায়ও অনুসরণ করল কিন্তু তারা তার কাছে পৌঁছতে পারেনি।
তখন মাধব তার বন্ধুকে বলল, "আমি ভাবছি যখন মালতী নিজের বাড়ির দিকে ফেরার জন্য বাইরে বেরোবে তখন ই আমরা তাকে ধরতে পারবো। আমরা সেই রাস্তার পাশে বড় গাছের ছায়ায় তাদের অপেক্ষা করব। "
মাধবের বন্ধুও মালতীর বান্ধবী মদ্যন্তিকা কে ভালোবাসতো। তারা গিয়ে গাছের নীচে বসে রইল। তারা তাজা ফুল সংগ্রহ করে দুজনেই এক - একটি সুন্দর মালা তৈরি করল।