মালতী ও মাধব

এটি একটি অনন্য প্রেমের গল্প। ভারতের বসবাসরত মাধব এবং মালতীর উৎকট ভালোবাসা, বিচ্ছেদ এবং সামাজিক অবস্থার বর্ণনা করা হয়েছে।


অংশ 6

শিবরাত্রির দিন ছিল। মালতীর মা ভগবান মহাদেবের আশীর্বাদ নিতে তাকে নিকটবর্তী একটি শহরের শিব মন্দিরে যেতে বলেছিলেন। মালতী এবং লবঙ্গীকা সেখানে গিয়ে শিবকে উত্সর্গ করার জন্য নিকটবর্তী বাগান থেকে কিছু ফুল সংগ্রহ করল। মালতীর মন্দিরে যাবার কথা ভগবতী কামন্দকি জানতেন।

তিনি মাধবকে ও সেখানে উপস্থিত থাকতে বলেছিলেন। ভগবতী কামন্দকিও সেখানে পৌঁছেছিলেন। তিনি মালতীকে নিজের কাছে বসালেন এবং জানালেন মাধব তার জন্য কতটা চিন্তিত হয়ে পড়েছিল। মাধবের বেদনার সম্পর্কে জানতে পেরে মালতী খুব দুঃখিত হল। এর পরে লবঙ্গীকা মালতীর করুণ অবস্থা সম্পর্কে বলল। হঠাৎ কারও চেঁচামেচির আওয়াজে সেখানকার শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিচলিত হয়ে উঠল।

“সাবধান, সাবধান, একটি সিংহ ছুঁটে গেছে। সে মানুষ ও পশুদের ওপরে  আক্রমণ করছে। একটি মেয়েটাকে দৌড়াতে দেখা গেছে। সে চিৎকার করছিল। "

"সাহায্য, সাহায্য করো। নন্দনের বোন মদ্যন্তিকার উপরে সিংহ আক্রমণ করেছে। তাকে সেই বন প্রাণী থেকে বাঁচাও। "

মাধব তত্ক্ষণাত্ দৌড়ে এসে জিজ্ঞাসা করল, "সে কোথায়? মদ্যন্তিকা কোথায়? "

মালতী ভয়ে চেঁচিয়ে উঠল। হঠাৎ কোথাও থেকে মাকরান্দ সেখানে এসে তরোয়াল নিয়ে সিংহের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ল। সিংহ মেয়েটিকে ছেড়ে মাকরান্দকে ধরে নিলো। মাকরান্দ খুব সাহসের সাথে যুদ্ধ করছিল এবং সে সিংহকে মেরেও ফেললো। তবে সেও গভীরপভাবে আহত হয়েছিল এবং তার ক্ষতগুলি থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছিলো। কামন্দকি শীঘ্রই মকরান্দকে তাঁর বিহারে পাঠিয়ে দিলেন। সেখানে তার চিকিৎসা ভালো ভাবে হয় যেত।

মাদ্যন্তিকাও আহত হয়েছিল তবে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল না। সেখানে উপস্থিত লোকজনের মধ্যে অনেক ভয় বেড়ে গেছিল। তবে শীঘ্রই সবকিছু আবার শান্ত হয়ে গেল। মালতী, মাধব এবং মদ্যান্তিকা নিয়মিত রূপে মাকরান্দর  সম্পর্কে খোঁজ খবর নিতে কামন্দকির বিহারে যেত। কিছু দিনের মধ্যেই তার ক্ষত ঠিক হয় গেছে এবং তার হারানো শক্তি ফিরে এসেছে। মালতী ও মাধব প্রতিদিন তাকে দেখতে আস্ত। একদিন মাধবকে সামরিক মহড়ায় অংশ নেওয়ার ছিল। তাই মালতী মাকরান্দকে দেখতে একা গেলো।

ফিরে যাওয়ার সময় ভগবতী কামন্দকি মালতীকে তার সাথে একটি ভিক্ষুনীকে নিয়ে যাওয়ার জন্য বললেন কিন্তু সে মানা করে দিলো। কিছুক্ষণ পরে ভগবতী কামন্দকি চিন্তিত হয় উঠলেন। তিনি মালতীকে নিয়ে উদ্বিগ্ন হয় উঠলেন। তিনি একটি ভিক্ষুনীকে এটি জানার জন্য নগরে পাঠালেন যে মালতী ঘরে পৌঁছেছে কি না। ভিক্ষুণী জানতে পারল যে মালতী এখনও বাড়িতে পৌঁছেনি। তিনি শীঘ্রই মাধবকে এই সংবাদটি জানাতে গেলেন।

মাধব তখন ই তার ঘোড়া নিয়ে বেরিয়ে গেল।