মালতী ও মাধব

এটি একটি অনন্য প্রেমের গল্প। ভারতের বসবাসরত মাধব এবং মালতীর উৎকট ভালোবাসা, বিচ্ছেদ এবং সামাজিক অবস্থার বর্ণনা করা হয়েছে।


অংশ 8

মালতী বলল, “আমি তোমার কাছে একটি প্রার্থনা করতে চাই। তুমি মাধবকে খুশি রাখার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করো এবং খেয়াল রেখো যে সে যেন আবোল-তাবোল কোনও কাজ না করে বসে। আমার এখন বেঁচে থাকার কোনও ইচ্ছা নেই কারণ আমি অন্য একজন পুরুষ কে বিয়ে করার অপরাধ করতে চলেছি তাই আমি যা করতে চাই, তা করতে আমাকে বাধা দিও না।"

মালতী তখন লবঙ্গীকার পায়ে পড়ল। তখন মাকরান্দ মাধবকে লবঙ্গীকার জায়গায় দাঁড়ানোর অনুরোধ করল। মাধবও তাই করল।

মাধব খুব মৃদু স্বরে বলল, "পাগলের মতো কথা বোলো না প্রিয় মালতী। আমি তোমাকে এই অবস্থায় দেখতে পাচ্ছি না। "

মালতী এখনও ভাবছিল যে লবঙ্গীকা তাঁর সাথে কথা বলছে, সে বলল আমার সংকল্প পূরণ করার জন্য তাকে তার সাহায্য করা উচিত।

মাধব বলল, "আমি তোমাকে কী বলতে পারি? তোমার থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া আমার পক্ষে ও অসহনীয় তবে একবার আমাকে জড়িয়ে ধরো।"

মালতী তখনও ভাবছিল যে সে লাবঙ্গিকা। ও উঠে মাধবকে জড়িয়ে ধরল।

"প্রিয় বন্ধু, আমার চোখে অশ্রু ভরা I আমি তোমাকে দেখতে পাচ্ছি না, তবে তোমার দেহের স্পর্শটি অন্যরকম মনে হচ্ছে। তবুও, মাধবকে আমার বার্তা দিও যে আমি এখন তার চাঁদের মুখটা কখনো  দেখতে পারবো না। প্রিয় বন্ধু, সর্বদা আমাকে স্মরণ কর এবং এই মালা যা মাধব আমাকে দিয়েছিল তুমি আজীবন এটির খেয়াল রেখো। তুমি এটিকে ঠিক তেমনি ভাবে গলায় পরে রেখো যেমন ভাবে আমি পরতাম ।

তারপরে মালতী হাত বাড়িয়ে মাধবের গলায় মালা পরিয়ে দিল। তারপরে হঠাৎ সে তার ভুল বুঝতে পারল। সে হতবাক হয়ে রয়ে গেল।

মাধব বলল, আমি কি কম কষ্ট সহ্য করেছি ? মাঝে মাঝে আমি এই চিন্তাভাবনা করে সান্ত্বনা পেতাম যে আমরা বিয়ে করব এবং এতে ও কি তুমি আমাকে ভালোবাসো"

ঠিক সেই সময়ে কামন্দকি সেখানে এসে মালতীকে বললেন, এই যে তোমার প্রিয়তম, যার জন্য তুমি এত কষ্ট ভোগ করলে। সেও তোমার মতো ই যন্ত্রণা ভোগ করেছে। এজন্য হে সুন্দরী মালতী, আর লজ্জা পেও না। ভালোবাসার আকাঙ্ক্ষাকে সত্য হতে দাও।"

তখন ভগবতী কামন্দকি মালতীর হাত ধরে মাধবের হাতে দিলেন এবং উভয়কে বিয়ে করিয়ে দিলেন। তিনি উভয়কেই বোঝালেন যে বিবাহিত জীবন কীভাবে কাটাতে হয়। তিনি তাদের সুখী ও সমৃদ্ধ হওয়ার আশীর্বাদ দিলেন এবং তাদের বাইরে বাগানে যেতে বললেন যে তারা এবং অন্যরাও পরে সেখানে পৌঁছে যাবে। মাধব মালতীর হাত ধরে বাগানের দিকে চলে গেল। সে খুশি ছিল যে সবকিছু তার ইচ্ছামতো হচ্ছে। কিছুক্ষণ পরে ভগবতী কামন্দকি, লবঙ্গীকা, মাকরান্দ এবং মদ্যন্তিকাও সেখানে পৌঁছেছিলেন।